ঠাকুরগাঁওয়ে দুই বিঘা জমি জুড়ে একটি আম গাছ
লেখক: মোঃ আব্দুল লতিফ, ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা | সোম, ২৫ এপ্রিল ২০১১, ১২ বৈশাখ ১৪১৮
ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় হরিণমারী-নয়াপাড়া গ্রামে দুই বিঘা জমি জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা ঐতিহাসিক সেই আম গাছ এখন পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী গাছটি দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এখানে আসে। এবার গাছটিতে মুকুল আসার পর গাছের মালিক ৪০ হাজার টাকায় গাছের আম আগাম বিক্রি করে দিয়েছেন।
কুমিল্লা থেকে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের স্কুল পরিদর্শক সেতারা বেগম সন্তানদের নিয়ে এসেছেন আম গাছটি দেখতে। তিনি জানান, এই বিশাল গাছটি দেখে তার জীবন সার্থক। মেয়ে ফয়েজা ও মেহেরীন গাছটি দেখে অভিভূত। আম গাছ যে এতবড় হয়, তা না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। একই কথা জানালেন ঢাকা থেকে আসা জামালউদ্দিন, তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, ছেলে অম্লান ও মে ে মাঈশা। দুই বিঘা জমি জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা এই গাছটি কৃষি বিশেষজ্ঞদের মতে এশিয়ার সর্ববৃহত্ আম গাছ। এখানে কেউ আসেন বনভোজনে, কেউ আসেন শিক্ষা সফরে, কেউ আসেন শুধু দেখার জন্য। মন্ত্রী, সচিব, হাইকমিশনার, উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতা ঠাকুরগাঁওয়ে আসলে এই গাছ দেখতে ভুলেন না। প্রশাসনের লোকজনও আম গাছটি দেখাতে তাদের নিয়ে যান বালিয়াডাঙ্গীতে।
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা সূর্যাপূরী জাতের আমের জন্য বিখ্যাত। তবে বেশি বিখ্যাত হয়ে আছে, দুই বিঘা জমি জুড়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল আকৃতির এই সূর্যাপূরী আম গাছের জন্য। পুরনো এই গাছটি চারদিকে ছড়িয়ে দিয়েছে বিস্তৃত ডালপালা। রয়েছে ১৯টি ডাল। প্রতিটি ডালের দৈর্ঘ্য ৫০/৬০ হাত। বিরাট জায়গা জুড়ে মাটিতে আসন গেড়ে জবুথবু হয়ে বসে থাকা গাছটিকে দেখলে মনে হয় সারি সারি আমগাছ জড়াজড়ি করে দাঁড়িয়ে আছে। স্থানীয় রহিমউদ্দীন (৭১) ও ভবেশ বাবু (৮০) জানান, গাছটির ডালপালা আরও অনেক বেশি ছিল। ঝড়ে ভেঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কমেছে গাছটির বিস্তৃতি। আশপাশের দশ গ্রামের সবচেয়ে প্রবীণ ব্যক্তিটিও গাছটির সঠিক বয়স সম্পর্কে কিছুই জানেন না। তবে এলাকার বেশিরভাগ লোক মনে করেন, গাছটির বয়স কিছুতেই দুইশ বছরের কম নয়। পৈতৃকসূত্রে গাছের মালিক সাইদুর রহমান ও নূর ইসলাম জানান, মুকুল আসার পর এ বছর ৪০ হাজার টাকায় গাছের আম আগাম বিক্রি করেছেন।
No comments:
Post a Comment